সব্যসাচী

অভুক্ত শ্বাপদচক্ষু নিঃস্পন্দ আঁধারে
জ্বলে রাত্রিদিন ৷
হে বন্ধু, পশ্চাতে ফেলি অন্ধ হিমগিরি
অনন্ত বার্ধক্য তব ফেলুক নিঃশ্বাস ;
রক্তলিপ্ত যৌবনের অন্তিম পিপাসা
নিষ্ঠুর গর্জনে আজ অরণ্য ধোঁয়ায়
উঠুক প্রজ্বলি' ৷
সপ্তরথী শোনে নাকো পৃথিবীর শৈশবক্রন্দন,
দেখে নাই নির্বাকের অশ্রুহীন জ্বালা ৷
দ্বিধাহীন চণ্ডালের নির্লিপ্ত আদেশে
আদিম কুক্কুর চাহে
ধরণীর বস্ত্র কেড়ে নিতে ৷
উল্লাসে লেলিহজিহ্ব লুব্ধ হায়েনারা—
তবু কেন কঠিন ইস্পাত ?
জরাগ্রস্ত সভ্যতার হৃৎপিন্ড জর্জর,
ক্ষুৎপিপাসা চক্ষু মেলে
মরণের উপসর্গ যেন
স্বপ্নলব্ধ উদ্যমের অদৃশ্য জোয়ারে
সংঘবদ্ধ বল্মীকের দল ৷

নেমে এসো—হে ফাল্গুনী,
বৈশাখের খরতপ্ত তেজে
ক্লান্ত দুবাহু তব লৌহময় হোক
বয়ে যাক শোণিতের মন্দাকিণী স্রোত ;
মুমূর্ষু পৃথিবী উষ্ণ, নিত্য তৃষাতুরা,
নির্বাপিত আগ্নেয় পর্বত
ফিরে চায় অনর্গল বিলুপ্ত আতপ ৷
আজ কেন সুবর্ণ শৃঙ্খলে
বাঁধা তব রিক্ত বজ্রপাণি,
তুষারের তলে সুপ্ত অবসন্ন প্রাণ ?
বিস্মৃতির অন্ধকার পারে
ধূসর গৈরিক নিত্য প্রান্তহীন বেলাভূমি 'পরে
আত্মভোলা তুমি ধনঞ্জয়৷৷
 

 

 

  kolkataonline.com<at>gmail.com