ছায়াবাজী |
আজগুবি নয়, আজগুবি নয়, সত্যিকারের কথা— ছয়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হল ব্যথা । ছায়া ধরার ব্যাবসা করি তাও জানোনা বুঝি ? রোদের ছায়া, চাঁদের ছায়া, হরেক রকম পুঁজি ! শিশির ভেজা সদ্য ছায়া, সকাল বেলায় তাজা, গ্রীষ্মকালে শুকনো ছায়া ভীষণ রোদে ভাজা । চিলগুলো যায় দুপুরবেলায় আকাশ পথে ঘুরে, ফাঁদ ফেলে তার ছায়ার উপর খাঁচায় রাখি পুরে । কাগের ছায়া বগের ছায়া কত ঘেঁটে হাল্কা মেঘের পানসে ছায়া তাও দেখেছি চেটে । কেউ জানে না এ–সব কথা কেউ বোঝে না কিছু, কেউ ঘোরে না আমার মত ছায়ার পিছুপিছু । তোমরা ভাব গাছের ছায়া অমনি লুটায় ভূঁয়ে, অমনি শুধু ঘুমায় বুঝি শান্ত মত শুয়ে ; আসল ব্যাপার জানবে যদি আমার কথা শোনো, বলছি যা তা সত্যি কথা, সন্দেহ নাই কোনো । কেউ যবে তার রয়না কাছে, দেখতে নাহি পায়, গাছের ছায়া ফটফটিয়ে এদিক ওদিক চায় । সেই সময়ে গুড়গুড়িয়ে পিছন হতে এসে ধামায় চেপে ধপাস করে ধরবে তারে ঠেসে । পাতলা ছায়া, ফোকলা ছায়া, ছায়া গভীর কালো— গাছের চেয়ে গাছের ছায়া সব রকমেই ভাল । |
গাছ গাছালি শেকড় বাকল মিথ্যে সবাই গেলে, বাপ্রে বলে পালায় ব্যামো ছায়ার ওষুধ খেলে । নিমের ছায়া ঝিঙের ছায়া তিক্ত ছায়ার পাক, যেই খাবে ভাই অঘোর ঘুমে ডাকবে তাহার নাক । চাঁদের আলোয় পেঁপের ছায়া ধরতে যদি পারো, শুঁকলে পরে সর্দিকাশি থাকবে না আর কারো । আমড়া গাছের নোংরা ছায়া কামড়ে যদি খায়, লাংড়া লোকের ঠ্যাং গজাবে সন্দেহ নেই তায় । আষাঢ় মাসের বাদলা দিনে বাঁচতে যদি চাও, তেঁতুল তলার তপ্ত ছায়া হপ্তা তিনেক খাও । মৌয়া গাছের মিষ্টি ছায়া 'ব্লটিং' দিয়ে শুষে, ধুয়ে মুছে সাবধানেতে রাখছি ঘরে পুষে ! পাক্কা নতুন টাট্কা ওষুধ এক্কেবারে দিশি— দাম করেছি সস্তা বড় চোদ্দ আনা শিশি । |
Illustration: Bimal Das. |